দিনাজপুরের হাকিমপুর পৌর শহরের দক্ষিণ বাসুদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আনোয়ারুল হক টুকু স্যারকে রাজকীয় আয়োজনের মধ্য দি...
দিনাজপুরের হাকিমপুর পৌর শহরের দক্ষিণ বাসুদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আনোয়ারুল হক টুকু স্যারকে রাজকীয় আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ ২৬ বছর এই প্রতিষ্ঠানে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি।
বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তাঁকে বিদায় জানায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ পরিণত হয়েছিল উৎসবের মেলায়। ছিল বেলুন, ব্যানার, ফুল আর ভালোবাসার ছোঁয়া। ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়ে স্যারকে বরণ করে নেয়, পরে আলোচনা সভা, মিষ্টি বিতরণ ও ফুলে সাজানো গাড়িতে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাকিমপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ জাহিদুল ইসলাম জাহিদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার মোঃ রুহুল আমীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পাউশগাড়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ মামুনুর রশীদ, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ জামান আলী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ নওশাদ আলীসহ আরও অনেকে।
সাবেক শিক্ষার্থী হাফসা খাতুন আবেগভরে বলেন, স্যার শুধু শিক্ষক ছিলেন না, ছিলেন অভিভাবকও। তিনি একদিন বলেছিলেন ‘তুমিই পারবে’ এই কথাই আমাকে জাতীয় পর্যায়ে উপস্থিত বক্তৃতায় অংশ নেওয়ার সাহস দিয়েছে।
হাকিমপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, টুকু স্যার এই বিদ্যালয়ের প্রাণ ছিলেন। ছাদবাগান থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ের প্রতিটি গাছ তাঁর হাতের ছোঁয়ায় বড় হয়েছে। তিনি নিজের পরিবারের চেয়ে বিদ্যালয়ের জন্যই বেশি সময় দিয়েছেন। তাঁর মতো একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষককে আমরা আজ কৃতজ্ঞচিত্তে বিদায় জানাচ্ছি।
অবসর গ্রহণকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ আনোয়ারুল হক টুকু অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, দীর্ঘ ২৬ বছর এই বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছি। সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্য ভেবে কাজ করেছি। কারও মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে ক্ষমা করবেন। প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ২৪ বছর কাজ করেছি, সেখানেও কোনো ভুল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
অনুষ্ঠান শেষে ফুলের মালা পরিয়ে, ফুলে সাজানো গাড়িতে করে প্রিয় শিক্ষককে বাড়ি পৌঁছে দেন অতিথি ও সহকর্মীরা। এসময় বিদ্যালয়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা কান্নাভেজা চোখে হাত নাড়িয়ে বিদায় জানায় তাদের প্রিয় টুকু স্যারকে।
মোকছেদুল মমিন মোয়াজ্জেম।
কোন মন্তব্য নেই