ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করে দেওয়ার নাম করে জয়পুরহাটের কালাইয়ে এক কলেজছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ডিজিটাল সেন্টারের উদ্দোক...
ভুক্তভোগী ওই কলেজছাত্রী অসুস্থ হয়ে বর্তমানে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তিনি উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের বেগুনগ্রাম এলাকার তসলিম উদ্দিনের মেয়ে।
ভুক্তভোগী, থানা পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ভোটার আইডি কার্ডে ত্রুটি থাকায় সংশোধন করার জন্য কালাই উপজেলা ডিজিটাল তথ্য ও সেবা কেন্দ্রের উদ্দোক্তা মামুনুর রশীদের কাছে যান ওই নারী। মামুন সবকিছু ঠিক করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন সময় ওই নারীর শরীরে হাত দিতেন এবং অফিসে কেউ না থাকার সুবাদে একদিন জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করেন। এভাবে দীর্ঘ ৬ মাস ঘুরানোর পরেও ভোটার আইডি কার্ড না পেয়ে গত ১১ অক্টোবর মঙ্গলবার মামুনকে চাপ প্রয়োগ করলে ভুক্তভোগী ওই কলেজছাত্রীকে একটি নকল ভোটার আইডি কার্ড কম্পিউটারে তৈরি করে দেন। সন্দেহ হলে ওই নারী ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে মোবাইলের সিম কিনতে দোকানে গেলে জানতে পারেন মামুনের দেওয়া ভোটার আইডি কার্ড নকল এবং তিনি প্রতারিত হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে মামুনুর রশীদকে ওই নারী জানালে তিনি আবারো কালাই ডিজিটাল সেন্টারে আসতে বলেন। ওই নারী তার অফিসে গেলে আবারো শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে বলেন মামুন। ওই নারী তার অনৈতিক প্রস্তাবে আর রাজি না হওয়ায় মামুন তার অফিস থেকে বের করে দেয়। এমতাবস্থায় কোন উপায় না পেয়ে কালাই বাসট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত শাওন ফার্মেসি থেকে কোন ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই ৮টি ঘুমের ঔষধ কিনেন। সবগুলো ঘুমের ঔষধ খেয়ে ডিজিটাল সেন্টারে যান এবং আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ভুক্তভোগী ওই নারী। বিষয়টি জানাজানি হলে অসুস্থ ওই নারীকে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তিনি বর্তমানে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন। এঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারীর বাবা বাদী হয়ে বুধবার রাতে কালাই থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ধর্ষক মামুনুর রশীদকে গ্রেফতার করেন।
কালাই থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি এসএম মঈনুদ্দিন জানান, ২৭ বছর বয়সী এক নারী কালাই উপজেলা ডিজিটাল সেন্টারে প্রজেক্টে কর্মরত কম্পিউটার অপারেটরের কাছে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁর বাবা বাদী হয়ে বুধবার রাতে থানায় মামলা করেছেন। এরপর রাতেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
কালাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, বিষয়টি আমি অবগত, লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ঘুমের ঔষধ বিক্রির বিষয়ে জয়পুরহাটের ওষুধ তত্তাবধায়ক মোকছেদুল আমিন বলেন, ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ঘুমের ঔষধ বিক্রির কোন সুযোগ নেই। তদন্ত করে দেখি শাওন ফার্মেসি কেন এ কাজ করেছে। প্রমাণ পেলে মোবাইল কোর্ট করা যায়কিনা অথবা দোকানটি সাময়িক বন্ধ করা যায়কিনা দেখছি।
মো: চঞ্চল বাবু/ ডেইলি জয়পুরহাট
কোন মন্তব্য নেই