জয়পুরহাটে চেকের মামলায় ব্যাংক চালান জালিয়াতি করে আসামী সোহেল রানাকে বাঁচাতে গিয়ে আইনজীবী আনিসুর রহমান এখন কারাগারে। সোমবার বিকেলে চীফ জুডিশ...
জয়পুরহাটে চেকের মামলায় ব্যাংক চালান জালিয়াতি করে আসামী সোহেল রানাকে বাঁচাতে গিয়ে আইনজীবী আনিসুর রহমান এখন কারাগারে। সোমবার বিকেলে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নীশিথ রঞ্জন বিশ্বাস এ আদেশ দেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সোহেল রানা নামে এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে ২৮ লাখ ১৬ হাজার টাকা চেকের টাকা পাওয়াকে কেন্দ্র করে আদালতে মামলা করেন বাদী আমানুল্লাহ। সেই মামলায় সোহেল রানা কারাগারে থাকেন। এরপর গত বছরের ১১ নভেম্বর আইনজীবী আনিছুর রহমান আসামী সোহেল রানার চেকে উল্লিখিত সমপরিমাণ জরিমানার টাকা অর্থাৎ- ২৮ লাখ ১৬ হাজার টাকার অর্ধেক ১৪ লাখ ৮ হাজার টাকা সোনালী ব্যাংকের ৮৩ নম্বর চালানমূলে জমা দেন। তারপর টাকা জমার কাগজপত্র দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দাখিল করেন। এতে সোহেল রানা আদালত থেকে জামিন পান। এরপর তিনি কারাগার থেকেও ছাড়া পান। তবে বাদীপক্ষের আইনজীবীরা চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে চালান মূলে ব্যাংক ও আদালতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আদালতে জমা দেওয়া ৮৩ নম্বর ব্যাংকের চালানে কোনও ব্যাংকে টাকা জমা করা হয়নি। বরং তাঁকে কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত করার জন্য আইনজীবী, কারারক্ষী ও মুহুরিসহ ৬ জন যোগসাজশ করে ভুয়া ব্যাংকের চালান ও অন্যান্য কাগজপত্র তৈরী করেন। এভাবে জালজালিয়াতি করে সোহেল রানাকে জামিনে মুক্ত করেন তাঁরা।
বিষয়টি বাদী ও ব্যাংকের কাছে সন্দেহজনক বলে মনে হয়। তাই তাঁরা এ বিষয়টি গোয়েন্দা পুলিশকে জানান। গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করে কাগজপত্র জালজালিয়াতির সত্যতা উদঘাটন করেন। এ ঘটনায় ওই আইনজীবী, মুহুরি ও কারারক্ষীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে জয়পুরহাট থানায় বাদী হয়ে চলতি বছরের ৮ নভেম্বর, গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) আমিরুল ইসলাম মামলা দায়ের করেন।
সেই মামলার আইনজীবী আনিছুর রহমান ভারতে পলাতক ছিলেন। সোমবার জয়পুরহাট চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন চাইতে আসেন তিনি। তখন বিচারক তাঁর জামিন না মঞ্জুর করেন। এরপর আদালত তাঁকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে জয়পুরহাট জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহনুর রহমান বলেন, 'ব্যাংক চালান জালিয়াতির ঘটনায় আইনজীবী আনিছুর রহমান জড়িত ছিলেন না। এ ঘটনায় তিনি নিজেই বাদী হয়ে একটি মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় চুড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন গোয়েন্দা পুলিশ। আবার একই ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশ বাদি হয়ে আইনজীবী আনিছুর রহমানসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আইনজীবী আনিছুর রহমানকে পরিকল্পিতভাবে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে। আজকে তাঁর জামিন আবেদন করা হয়েছিলো। আদালত তাঁর জামিন নামঞ্জুর করেছেন। অসত্য ও সাজানো মামলায় আইনজীবিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আমরা এ ঘটনার প্রতিবাদ করেছি।
মো. আতাউর রহমান।
কোন মন্তব্য নেই