দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার বোয়ালদাড় ইউনিয়নের বৈগ্রাম ফোরকানিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৫ সালে। সাত দশকের ঐতিহ্য নিয়ে ধর্মীয় শিক্ষার আলো ছ...
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার বোয়ালদাড় ইউনিয়নের বৈগ্রাম ফোরকানিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৫ সালে। সাত দশকের ঐতিহ্য নিয়ে ধর্মীয় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসা এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে টিকে থাকার লড়াই করছে। অর্থসংকট, জরাজীর্ণ ভবন, শিক্ষকদের নিয়মিত বেতন না পাওয়া। সব মিলিয়ে মাদ্রাসাটি এখন মারাত্মক সংকটে।
অর্থের অভাবে জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান। ভাঙা দেওয়াল, ফাটল ধরা ঘর, যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা। শিক্ষকরা মাসের পর মাস বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্থানীয়রা বলছেন, সবার সহযোগিতা পেলে এই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
স্থানীয় এলাকাবাসী রফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রামের অনেক গরিব পরিবারের ছেলে-মেয়েরা এই মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। ভবনের দেয়াল ভেঙে পড়ার উপক্রম, তবুও তারা ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। এভাবে কতদিন চলবে তা নিয়ে আমরা সবাই উদ্বিগ্ন।
শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, প্রতিদিন ভাঙা ঘর আর নড়বড়ে দেওয়ালের মধ্যে ক্লাস করতে ভয় লাগে। তারপরও পড়া বন্ধ করি না, কারণ এই মাদ্রাসাই আমাদের একমাত্র ভরসা। দ্রুত ভবন মেরামত আর শিক্ষকদের নিয়মিত বেতন নিশ্চিত হলে আমরা আরো ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারব।
স্থানীয় মুদি দোকানি আব্দুল গফুর বলেন
মাটির ঘরগুলো এখন প্রায় ভেঙে পড়ার মতো অবস্থায়। আমাদের প্রত্যাশা সবাই একটু একটু করে সহযোগিতা করুক। তাহলেই ৭০ বছরের ঐতিহ্য ধরে রাখা এই মাদ্রাসাটি আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
অভিভাবক জাকির হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকদের নিয়মিত বেতন দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। অথচ এই প্রতিষ্ঠানটিই গ্রামের ধর্মীয় শিক্ষার প্রধান ভরসা। সময়মতো সহায়তা না পেলে মাদ্রাসার টিকে থাকাই কঠিন হয়ে যাবে।”
মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক সামছুজ্জামান বলেন,
মাটির ভবনগুলো ফেটে গেছে। যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে। নতুন ভবন নির্মাণ এখন খুবই জরুরি। কিন্তু অর্থের অভাবে শিক্ষকদের বেতন পর্যন্ত ঠিকমতো দেওয়া যাচ্ছে না। উপজেলা প্রশাসনসহ সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চাই।
মাদ্রাসার সভাপতি কাশেম আলী বলেন, অবস্থা এতই খারাপ যে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা প্রতিদিন দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে ভবনে প্রবেশ করেন। নতুন ভবন নির্মাণ ছাড়া উপায় নেই।
বোয়ালদাড় ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. নাজমুল হক বলেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। সরকারি সহায়তার পাশাপাশি সমাজের সামর্থ্যবানরা এগিয়ে এলে মাদ্রাসার সংকট অনেকটাই কেটে যাবে।
৭০ বছরের ঐতিহ্য বহন করা বৈগ্রাম ফোরকানিয়া মাদ্রাসা আজ টিকে থাকার সংগ্রামে। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে আবারও বাঁচবে এই ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
মোকছেদুল মমিন মোয়াজ্জেম।

কোন মন্তব্য নেই