Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Hover Effects

TRUE
{fbt_classic_header}

Header Ad

ব্রেকিং নিউজ

latest

Ads Place

জয়পুরহাটে জনপ্রিয় হচ্ছে ড্রিপ সেচ পদ্ধতি

জয়পুরহাটে সনাতন প্লাবন পদ্ধতির পরিবর্তে আধুনিক ড্রিপ সেচ পদ্ধতিতে ফলবাগানে পানি সরবরাহ করার বিষয়টি কৃষকদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে।  ড্রি...

জয়পুরহাটে সনাতন প্লাবন পদ্ধতির পরিবর্তে আধুনিক ড্রিপ সেচ পদ্ধতিতে ফলবাগানে পানি সরবরাহ করার বিষয়টি কৃষকদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে।  ড্রিপ সেচ পদ্ধতিতে চাষকরা ফলবাগানে অতিরিক্ত পানি লাগেনা। এ পদ্ধতিতে খরচ কম হয়। কিন্তু উৎপাদন বাড়ে। তাই আধুনিক ড্রিপ সেচ পদ্ধতিতে ফলবাগানে পানি সরবরাহ করে জেলার কৃষকরা এখন বেশি লাভবান হচ্ছেন। 

এমনই একজন কৃষক হলেন- জয়পুরহাট সদর উপজেলার পালি গ্রামের গোলাম আযম। তিনি তাঁর আড়াই বিঘা আয়তনের  ড্রাগন ফলের বাগানে পানি দিচ্ছেন আধুনিক ড্রিপ সেচ পদ্ধতিতে। তিনি তাঁর ওই ফলবাগানে বরাবরই প্লাবন পদ্ধতিতে সেচ দিতেন। এতে সে সময়ে তাঁর বাগানে ফলের উৎপাদন কম হতো। কিন্তু উৎপাদন খরচ বেশি হতো। ফলে লাভও হতো কম। এ অবস্থায় একদিন বেসরকারি সংস্থা 'জেআরডিএমে'র কৃষি কর্মকর্তা আহসান হাবিবের সাথে কৃষক গোলাম আযমের পরিচয় হয়। তাঁরই পরামর্শে  গোলাম আযম বিনামুল্যে  'জেআরডিএম' থেকে আধুনিক ড্রিপ সেচ পদ্ধতিতে ফলবাগান চাষের উপর প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে ড্রিপ সেচ পদ্ধতির যাবতীয় সেচ সরঞ্জামও দেওয়া হয় 'জেআরডিএম' থেকে। 

কৃষক গোলাম আযম বলেন, ' আগে আমি শ্যালো মেশিন দিয়ে (সনাতন প্লাবন পদ্ধতিতে) আমার ড্রাগন ফলের বাগানে সেচ দিতাম। তখন পানি লাগতো বেশি । ফলবাগানের কোন কোন জায়গায় তখন হাঁটু পানি জমতো। আবার কোন কোন জায়গায় মোটেও পানি উঠতোনা। শ্রমিকও লাগতো বেশি। এ অবস্থায় একপর্যায়ে 'জেআরডিএম' থেকে আধুনিক ড্রিপ সেচ পদ্ধতির উপর

প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত আমার ড্রাগন ফলবাগানে আমি ড্রিপ সেচ পদ্ধতিতে পানি সরবরাহ করছি। এতে একদিকে আমার খরচ কমেছে। অন্যদিকে  ফলের উৎপাদন বেড়েছে। সবমিলিয়ে এখন আমি আগের চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছি।'

গোলাম আযমের সফলতার বিষয়টি লোকমুখে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে এখন জেলার অন্যান্য কৃষকরাও আধুনিক ড্রিপ সেচ পদ্ধতিতে ফলবাগানে পানি সরবরাহ করতে শুরু করেছেন। দিন দিন বেড়েই চলেছে আধুনিক  এ সেচ পদ্ধতির জনপ্রিয়তা। 

কৃষক গোলাম আযমের দেখাদেখি এখন জয়পুরহাট সদর উপজেলার অনেক কৃষক তাঁদের ফলবাগানে আধুনিক ড্রিপ সেচ পদ্ধতিতে পানি সরবরাহ করছেন। এ তালিকায় আছেন সদর উপজেলার পালি গ্রামের রফিকুল ইসলাম অপু। তিনি এখন তাঁর ১ বিঘা (৩৩ শতক) ড্রাগন ফলের বাগানে  এবং একই উপজেলার খঞ্জনপুর এলাকার কৃষক হেলাল উদ্দিন তাঁর ১ বিঘা (৩৩ শতক) আম বাগানে ড্রিপ সেচ পদ্ধতিতে পানি সরবরাহ করে সুফল পাচ্ছেন।

আগামীতে ড্রিপ সেচ পদ্ধতিতে নিজেদের আম, লিচু ও নারিকেল ফলবাগানে পানি সরবরাহ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন- সদর উপজেলার করিম নগর গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান, একই গ্রামের আনিসুর রহমান বাবু, পাড়ুলিয়া গ্রামের আরমান আলীসহ অনেকে।   

'জেআরডিএম' জয়পুরহাট শাখার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আহসান হাবিব বলেন, "কৃষকরা সনাতন পদ্ধতিতে বিশেষ করে 'ফ্লাড ইরিগেশন সিস্টেমে' (প্লাবন পদ্ধতিতে) সেচ দিতে অভ্যস্ত। এতে তাঁদের ফসলের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যায়। ফসলের এই উৎপাদন খরচ কমাতে এবং জমিতে অল্প পানি ব্যবহারের বিভিন্ন পদ্ধতি যেনম; ড্রিপ সেচ, এ.ডব্লিউ.ডি, স্পিন কলার (sprinkler) ইত্যাদি বিষয়ে 'পিকেএসএফ' এর আর্থিক সহযোগিতায় 'জেআরডিএম' বিনামূল্যে প্রশিক্ষণসহ যাবতীয় উপকরণ ও কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে কৃষকদের। ড্রাগন ফল চাষি গোলাম আযম এমন সুফল ভোগী কৃষকদেরই একজন।'

জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম জানান, পানি সাশ্রয়ী বিভিন্ন পদ্ধতি বিশেষ করে ড্রিপ সেচ পদ্ধতি স্ট্যাবলিস্ট  ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সম্প্রসারণ বিভাগ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষকদের পরামর্শ ও যাবতীয় কারিগরি সহায়তা বিনামূল্যে দিচ্ছে। এ বিষয়ে আগামীতে জেআরডিএম ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সমন্বিত ভাবে কৃষকদের পাশে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 মো. আতাউর রহমান।

 

কোন মন্তব্য নেই

Ads Place