জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা সদর থেকে আট কিলোমিটার দূরে গোপীনাথপুর ইউনিয়নের গোপীনাথপুরে বসে দোলপূর্ণিমার মেলা। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, উত্তর...
মেলাটি দোলপূর্ণিমার দিন অর্থাৎ গত শুক্রবার মেলা শুরু হয়েছে। চলবে ১৩ দিন ধরে। মেলা শুরুর পাঁচ দিন অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে গরু, মহিষ ও ঘোড়া বিক্রি হয়। একে বলে গো-হাটা। গো-হাটা ভেঙে গেলেও বাকি দিনগুলোতে চলে হরেক রকম পণ্যের কেনাবেচা।
গতকাল রোববার মেলায় গিয়ে দেখা যায়, এবার গরু, মহিষ ও ঘোড়ার তেমন আমদানি হয়নি। গো-হাটার বেশির ভাগ জায়গা ফাঁকা পড়ে রয়েছে। রকমারি দোকানগুলোও পুরোদমে বসেনি। সেখানেও অনেক জায়গা ফাঁকা রয়েছে। মেলায় লোকজনের সমাগম কম।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, এ মেলা ঘিরে আশপাশের চার উপজেলার শতাধিক গ্রামে আনন্দ-উৎসব বিরাজ করত। এসব গ্রামের মানুষ সাংসারিক জিনিসপত্র কেনাকাটার জন্য সারা বছর মেলার অপেক্ষা করতেন। মেলাটি আগে মাসব্যাপী চলত। এখন ১৩ দিনব্যাপী চলে। করোনার জন্য ২০২০ ও ২১ সালে মেলা বন্ধ ছিল। এর আগে কখনো এ মেলা বন্ধ হয়নি। এবারও মেলা বসবে কি না, তা নিয়ে লোকজনের মনে সন্দেহ ছিল। এ কারণে এবার মেলা তেমন একটা জমেনি।
নাটোর থেকে ২২ জোড়া মহিষ নিয়ে মেলায় এসেছেন আবদুল হাকিম। তিনি বলেন, এবার মেলায় গো-হাটা তেমন জমেনি। ব্যাপারীরাও কম এসেছেন। এ কারণে কাঙ্ক্ষিত দাম মিলছে না। মেলায় দুই জোড়া মহিষ সাড়ে সাত লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন।
বগুড়ার নন্দীগ্রামের রেজাউল করিম বলেন, ‘পাঁচটি ঘোড়া মেলায় এনেছি। দুটি ঘোড়া ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। মেলায় এবার ঘোড়ার আমদানি কম হয়েছে। দূরের ব্যাপারীরাও তেমন আসেননি। এ কারণে ঘোড়ার ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে না।’
মেলা কমিটির সভাপতি ও গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, দেশের অনেক স্থানের মানুষ এখনো জয়পুরহাট জেলা চেনেন গোপীনাথপুর মেলার সূত্র ধরে। গোপীনাথপুর দোলপূর্ণিমা মেলা শুধু জয়পুরহাট জেলার নয়, উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্য। মেলার অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মেলায় লোকজন যাতে নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে পারে, এ জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মেদ ভুঞা বলেন, মেলার নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া সাদা পোশাকেও পুলিশ টহল দিচ্ছে।
রবিউল ইসলাম রুবেল।
কোন মন্তব্য নেই