Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Hover Effects

TRUE
{fbt_classic_header}

Header Ad

ব্রেকিং নিউজ

latest

Ads Place

শীতকালে পিঠা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন খতেজা বেওয়া

দিনাজপুরের হিলির কালীগঞ্জ এলাকার মৃত চাঁন মিয়ার ৬০ বছর বয়সী স্ত্রী খতেজা বেওয়া, শীতকালে পিঠা বিক্রি করে আর গরমকালে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ ক...

দিনাজপুরের হিলির কালীগঞ্জ এলাকার মৃত চাঁন মিয়ার ৬০ বছর বয়সী স্ত্রী খতেজা বেওয়া, শীতকালে পিঠা বিক্রি করে আর গরমকালে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে জীবন চলে তার। দিনে ১৫০ থেকে ২০০ টাকার পিঠা বিক্রি করে লাভ হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকা। স্বল্প লাভে খেয়ে না খেয়ে প্রায় সময় তাকে চলতে হয়।

বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাতে হিলির গোডাউন মোড়ে দেখা যায়, বৃদ্ধা খতেজা বেওয়া ভাবা পিঠা ও চিতা পিঠা তৈরি করে ক্রেতার অপেক্ষায় বসে আছে। প্রতিদিন বিকেল ৪ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত ভাবা পিঠা ও চিতায় পিঠা বিক্রি করেন সে। পিঠার সাথে থাকে গুড় ও বিভিন্ন চাটনি। প্রতিদিন দেড় থেকে দুই কেজি চালের পিঠা তৈরি করে, তা বিক্রি করে পাঁচ টাকা পিচ। দেড়শত থেকে দুইশত টাকা বিক্রি করেন তিনি। তাতে লাভ হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকা। গত শীতকালের চেয়ে চলতি শীত মৌসুমে তার পিঠার বেচা-বিক্রি অনেকটাই কম। স্বল্প আয়ে তার একক সংসার চলে কোন রকম।

খতেজা বেওয়ার স্বামী মারা গেছে ৩০ বছর আগে। সংসারে রেখে যান একমাত্র কন্যা সন্তান, অনেক কষ্ট করে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে তিনি। আজ এই বৃদ্ধা নিঃসঙ্গ, মাথার ছাদ বলে কিছুই নেই তার। বর্তমান পিঠা বিক্রি ও মানুষের বাড়িতে কাজ করে চলে তার জীবন। মাথা গোজার ঠাঁই নেয় তার, অন্যের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। স্বামী সন্তান কিছুই তার নেয়, সব হারিয়ে এই বৃদ্ধা মহিলা আজ মানবতার জীবন যাপন করছেন। ভবিষ্যৎ তার অন্ধকার, দেখার কোন অবলম্বন নেয় এই বৃদ্ধা মহিলার। বিধবা ভাতার কার্ড পেয়েছে তিনি, তবে ভুমিহীন হিসেবে এখনও সরকারি কোন ঘর বরাদ্দ পাননি। দুই বছর আগে একটি ঘরের আশায় চেয়ারম্যানদের কাছে কাগজপত্র জমা দিয়েও কেন লাভ হয়নি। হয় তো একটি সরকারি ঘর পেলে নিঃসঙ্গ জীবনে একটু স্বস্তি পেতেন এই খদেজা বেওয়া।

গোডাউন মোড়ের পানের দোকানদার রেজাউল করিম বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ দেখে আসছি এই বৃদ্ধা মহিলা এখানে শীতকালে পিঠা বিক্রি করে আসছেন। তার আপন বলতে জগতে কেউ নেই, অনেক কষ্ট করে চলে। মানুষের বাড়িতে ভাড়া থেকে বেড়ায়। সরকার যদি এই অসহায় মানুষটিকে একটি ঘর দিতো তাহলে তার অনেক উপকার হতো।

খতেজা বেওয়া বলেন, হামার মতো দুঃখি দুনিয়ায় কেউ নাই বাহে। স্বামী সংসার ক্যাছুই নাই, এ্যাটা বেটি ছিলো, বিয়া দিয়া তাও চলে গেয়ছে। এ্যালা বেচে কোন মতে চলি। এ্যাটা বেটা হামার থাকলে মোক আর চিন্তা করতে হতই নাই। সেই ৩২ বছর আগে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থেকে এ্যাটেকুনা আয়ছু। স্বামী মরে মোর আর কেউ এ্যাটে নাই। এতোদিনতে মুই মানুষের বাড়িতে ভাড়া থাকু। কেউ যদি মোক এ্যানা এ্যাট ঘর দিতো হয়, তাহলে নিজের ঘরে মরেও মুই শান্তি পাতু হয়।

এ বিষয়ে হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নুর-এ আলম বলেন, এই বৃদ্ধা মহিলা খতেজা বেওয়ার বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে তার আইডি কার্ড দেখবো, যদি ক'শ্রেণীতে তার নাম থাকে তাহলে তার একটি ঘরের ব্যবস্থা করবো। আর যদি নাম না থাকে তাহলে আগামীতে অবশ্যই তার জন্য একটি ঘর ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।


মোকছেদুল মমিন মোয়াজ্জেম।

 

কোন মন্তব্য নেই

Ads Place