সারাবছর পানি জমে থাকায় বসতবাড়ি ও সড়কের পাশের নিচু জমিতে তেমন কোনো ফসলের আবাদ হয় না। এসব পানি জমে থাকা জমিগুলোই কাজে লাগিয়েছেন জয়পুরহাটের কয়ে...
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, বাণিজ্যিকভাবে পানিফল চাষ করে ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন জয়পুরহাটের চাষিরা। বিঘাপ্রতি মাত্র ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ করে পানিফল বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত। খরচ কম হওয়ায় অনেকেই ঝুঁকে পড়েছেন এই ফল চাষে। সরকারিভাবে সহায়তা পেলে এ চাষ আরও বাড়বে বলে মনে করছেন চাষিরা।
সদর উপজেলার গতনশহর এলাকার চাষি মইনুল ইসলাম বলেন, এই পানিফল খুব লাভজনক একটি ফল। এটি চাষে কীটনাশক ও শ্রমিকসহ খরচ পড়ে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা। আর নিজেই যদি কাজ করি তাহলে ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা খরচ পড়ে। ফলন ভালো হলে এক বিঘায় ৫০ মণ পর্যন্ত ফল উৎপাদন হয়।
আইয়ুব হোসেন নামে একজন বলেন, এই ফলের তেমন রোগবালাই নেই। দুই একবার শুধু কীটনাশক ওষুধ দিতে হয়। এজন্য খরচ অনেক কম। এবার বিঘাপ্রতি ৪০ মণের বেশি ফলন হয়েছে। মণপ্রতি দাম পেয়েছি ৫০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। এতে আমাদের বিঘাপ্রতি ৩০ হাজার টাকার মতো লাভ হয়েছে।
একই এলাকার চাষি আওয়াল হোসেন বলেন, আলু ধানসহ অন্য ফসলের চেয়ে লাভজনক হওয়ায় আমি এবার সাড়ে তিন বিঘা জমিতে পানিফলের চাষ করেছি। আমাদের নিচু জমিতে পানি জমে থাকায় অন্য ফসল হয়না, তাই এই ফল চাষ করেছি। সরকার থেকে এই ফল চাষে কোনো প্রশিক্ষণ পেলে কৃষকরা উপকৃত হতো ।
আরেক চাষি শাহিনুর রহমান বলেন, পানি ফল চাষ ব্যাপক লাভজনক হলেও এর বীজ সংরক্ষণ করা যায় না। তাই এ ফল চাষে সবচেয়ে বড় সমস্যা বীজের সংকট। সেজন্য স্থানীয় কৃষি বিভাগ বীজ সরবরাহ করলে এর চাষ আগামীতে আরও ছড়িয়ে পড়বে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, জয়পুরহাট জেলায় এবার প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে পানিফলের চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফলের বাজারেও রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তাই পতিত এসব জমি ফেলে না রেখে পানিফল চাষের পরামর্শ তার।
সাগর কুমার।
কোন মন্তব্য নেই