জয়পুরহাট রেলওয়ে স্টেশনে আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ নামে এক যাত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে হেড বুকিং সহকারী মনিরুল করিম মুনের বিরুদ...
জয়পুরহাট রেলওয়ে স্টেশনে আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ নামে এক যাত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে হেড বুকিং সহকারী মনিরুল করিম মুনের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগি ওই যাত্রী। আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ জয়পুরহাট জেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে কর্মরত আছেন বলে জানা গেছে। এদিকে ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, যাত্রী আব্দুর রাজ্জাক পাবনা যাওয়ার জন্য দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকেট কাটতে জয়পুরহাট রেল স্টেশনের কাউন্টারে যান। সেখানে তিনি লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট সংগ্রহ করতে দুইশ টাকা দেন। কাউন্টার থেকে তাকে খুচরা টাকা দিতে বলা হয়। কিন্তু আব্দুর রাজ্জাক খুচরা টাকা দিতে পারেননি। তখন হেড বুকিং সহকারী মনিরুল করিম ওই যাত্রী খুচরা টাকা আনার তাগিদ দেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মনিরুল করিম কাউন্টার থেকে বাহিরে এসে যাত্রী আব্দুর রাজ্জাককে ধাক্কা মারেন। এরপর দুজনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। এরপর মনিরুল করিম ওই যাত্রীকে টেনে-হেচড়ে স্টেশন মাস্টারের রুমে পরে কাউন্টার কক্ষের ভেতরে নিয়ে বিভিন্নভাবে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। ওই যাত্রীর শার্ট ছিঁড়ে গেলে রেলওয়ের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে স্টেশন মাস্টারের রুমে নিয়ে আসেন। সেখানে মনিরুল করিম মুন ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান।
যাত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্টেশনে টিকিট কাটাকে কেন্দ্র করে স্টেশনের হেড বুকিং সহকারী মনিরুল করিম মুন আমাকে বিভিন্নভাবে লাঞ্ছিত করেছে। তারা এক লাইনে টিকিট না দিয়ে এক লাইন থেকে আরেক লাইনে ঘুরাঘুরি করাচ্ছিল। কাউন্টারের ভেতর থেকে এসে আমাকে টেনে অফিসের ঘরে নিয়ে গিয়ে বিভিন্নভাবে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন। শার্টও ছিড়ে গেছে। পরে সাংবাদিকরা আসলে তিনি ভুল করেছেন বলে ক্ষমা চান। সে স্থানীয় হওয়ায় দাম্ভিকতার সাথে ক্ষমতায় দেখায় যে, সে মানুষকে মানুষই মনে করেনা। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
অভিযুক্ত হেড বুকিং সহকারী মনিরুল করিম মুন বলেন, টাকা খুচরা না থাকা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে ওই যাত্রী আমাকে গালিগালাজ করে। এসময় তার সঙ্গে কথা বলতে গেলে একটু ধস্তাধস্তি হয়। আমি তাকে টেনে নিয়ে আসিনি। সে আমার হাত ধরতে গেলে ধস্তাধস্তি হয়। পরে সবার উপস্থিতিতে বিষয়টি মিমাংসা হয়েছে।
জয়পুরহাট রেলষ্টেশনের মাস্টার রফিক চৌধুরী বলেন, কথাকাটাকাটির এ পর্যায়ে ওই যাত্রী হেড বুকিং সহকারীকে বলেন, তুমি বাহিরে আসো তোমাকে দেখছি। এই নিয়ে ঠেলাঠেলি হয়েছে এটুকু শুনেছি। তবে ধাক্কাধাক্কি বা মারধরের ঘটনা যদি ঘটে তাহলে সরকারি বিধি অনুযায়ী সে ভুল করেছে। তার এটা অপরাধ। একজন যাত্রীকে ধাক্কা দিয়ে মারামারি করা এটা অপরাধ। মুন ওই যাত্রীর কাছে ক্ষমাও চাইছে।
এ বিষয়ে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, সরকারি কর্মকর্তা হয়ে এ ধরনের আচরণের সুযোগ নাই। আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী চলতে হবে। এ ধরনের ঘটনা যদি আমাদের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রেজাউল করিম রেজা।

কোন মন্তব্য নেই