Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Hover Effects

TRUE
{fbt_classic_header}

Header Ad

ব্রেকিং নিউজ

latest

Ads Place

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে ২শ বছরের পুরনো ঘুড়ির মেলা

সনাতন ধর্মালম্বীদের সন্ন্যাস পুজা উপলক্ষ্যে জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে সন্ন্যাস মেলা ও ঘুড়ির উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সন্ন্যাস পুজা উপলক্ষ্যে ক্ষেতল...

সনাতন ধর্মালম্বীদের সন্ন্যাস পুজা উপলক্ষ্যে জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে সন্ন্যাস মেলা ও ঘুড়ির উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সন্ন্যাস পুজা উপলক্ষ্যে ক্ষেতলাল উপজেলার তুলসীঙ্গা নদীর তীরে সন্ন্যাসতলী নামক স্থানে প্রতি বছর জৈষ্ঠের শেষ শুক্রবার দিনব্যাপী বসে এই মেলা।

প্রায় দুই শ’ বছরের পুরাতন এই মেলার মুল পশরা মিঠাই, মিষ্টান্ন, গৃহস্থালী ও হাতের কারুকাজের পন্য। তবে সব থেকে আকর্ষন ছিল গ্রামীন ঐতিহ্যের প্রতিক ঘুড়ি উৎসব। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন।

সনাতন ধর্মালম্বীদের মেলা হলেও মুলত সব ধর্মের মানুষের মিলন মেলা ঘটে এইদিন। আশপাশের গ্রাম ছাড়াও দুর দুরান্ত থেকে মেলা ও ঘুড়ি প্রেমিকরা ছুটে আসেন মেলায়। গৃহস্থালী পন্য, খেলনা সামগ্রী, কসমেটিকস, মিঠাই মিষ্টান্ন, মাছ ধরার সামগ্রী, হাতপাখা ও ঘুড়ির জন্য সুখ্যাতি রয়েছে এই মেলার। আশপাশের লোকজন সারাবছরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এই মেলা থেকে সংগ্রহ করে থাকেন। মেলাকে কেন্দ্র করে গ্রামে আত্মীয় স্বজনদেরও আগমন ঘটে। মেলার অন্যতম আকর্ষণ ঘুড়ি উৎসব। আশে পাশের গ্রাম ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে নানান বয়সী মানুষ এই মেলায় আসেন নানান রঙের ও রকমের ঘুড়ি উড়ানো দেখতে এবং ঘুড়ি কিনতে।স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, দুই’শ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।

সব মিলে বছরের এই দিনে বড় উৎসবের আমেজ বিরাজ করে এই অঞ্চলে। মাত্র এক দিনের আয়োজন হলেও ক্রেতা-বিক্রেতা আর উৎসুক দর্শনার্থীদের ঢল নামে এখানে। মেলায় আশপাশের গ্রাম ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষের আগমণ ঘটে এ মেলায়।

স্থানীয় মহব্বতপুর গ্রামের দুলাল, জিয়াপুরের কাজী রফিকুল বলেন- আমাদের বাবা-দাদারা এই মেলা করতে এসেছিল আমরাও এই মেলাতে কেনাকাটা করতে আসি। মেলাকে ঘিরে আশপাশের জেলা থেকে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে। মেলাতে আসা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার ফারুক হোসেন, বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার নিতাই চন্দ্র, দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা আলিফ হোসেন বলেন, প্রতিবছর এই সন্ন্যাসতলী মেলাতে আসি আমরা শুধু ঘুড়ি কিনতে।

জিয়াপুর গ্রামের আলী হাসান রিপন ও মহব্বতপুর গ্রামের আমেদুল ইসলাম বলেন, আমাদের বাব-দাদারা এই মেলায় আসতেন। তাদের দেখাদেখি এখন আমরাও এই মেলাতে আসি। এই মেলা আমাদের এখানকার একটি ঐতিহ্য।

মেলাতে আসা বগুড়া দুপচাচিয়া উপজেলার আজাদ আলী, বগুড়া কালিতলা সদর উপজেলার আবুল কালাম আজাদ, দিনাজপুরের হাকিম পুর উপজেলার ফুল মিয়া, জিয়াপুর গ্রামের ছানাউল কাজী সহ অনেকেই বলেন, প্রতি বছর এই সন্যাসতলী মেলাতে আসি। এখানে ঘুড়ি ছাড়াও প্রায় সব ধরনের জিনিসপত্র পাওয়া যায়।

নওগাঁর বদলগাছির ঘুড়ি ব্যবসায়ী করিম হোসেন জানান, সন্ন্যাসতলীর মেলায় বড় ভাইয়ের সাথে ১০/১২ বছর ধরে এ মেলায় ঘুড়ি বিক্রির জন্য আসে। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি।

সন্যাসতলী মেলা কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরের মত এবারেও বসেছে সন্যাশতলী মেলা। এই মেলা প্রায় ২০০ বছর ধরে চলে আসছে। মেলাটি হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলে পরিচালনা করি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা এ মেলায় আসেন।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই সন্যাসতলী মেলার মূল আর্কষণ ঘুড়ি। এ মেলাকে ঘিরে আশপাশের জেলা থেকে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে। মেলাটি মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।

এস এম শফিকুল ইসলাম।

 

কোন মন্তব্য নেই

Ads Place