Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Hover Effects

TRUE
{fbt_classic_header}

Header Ad

ব্রেকিং নিউজ

latest

Ads Place

জয়পুরহাট -১ আসনে প্রধান দুই দলে দ্বন্দ্ব চার গ্রুপে

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, দলীয় নেতা-কর্মীদের বেশি সুবিধা পাওয়া—নির্বাচন নিয়ে জয়পুরহাট-১ আসনের ভোটারদের মধ্যে ভাবনার ...

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, দলীয় নেতা-কর্মীদের বেশি সুবিধা পাওয়া—নির্বাচন নিয়ে জয়পুরহাট-১ আসনের ভোটারদের মধ্যে ভাবনার অনেকটা জুড়ে এখন এসব ইস্যু। পাঁচবিবি ও সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে টানা দুবার এমপি হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামসুল আলম দুদু। ব্যক্তিগতভাবে তিনি বেশ জনপ্রিয় হলেও এবার তাঁর জন্য পরিস্থিতি কঠিন হতে পারে।

জয়পুরহাটে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে এখন দুটি করে গ্রুপ। আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন জয়পুরহাট-২ আসনের এমপি আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। অপর গ্রুপের নেতৃত্বে এ আসনের বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট শামসুল আলম দুদু। আবার বিএনপির একটি গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ শামছুল হক। অন্য গ্রুপের নেতৃত্বে বিএনপির জাতীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং প্রয়াত এমপি আব্দুল আলীমের ছেলে ফয়সাল আলীম।

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে শক্ত অবস্থানে আছেন তিনজন। বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট শামসুল আলম দুদু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রকেট ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মণ্ডল। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ খাজা শামছুল আলম, জয়পুরহাট পৌরসভার মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, জয়পুরহাট সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম এবং পাঁচবিবি পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিব।

বিএনপি থেকে আলোচনায় আছেন জাতীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং প্রয়াত এমপি আব্দুল আলীমের ছেলে ফয়সাল আলীম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং প্রয়াত এমপি মোজাহার আলী প্রধানের ছেলে মাসুদ রানা প্রধান ও সাবেক সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান। এ ছাড়া মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ শামছুল হক, জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক গোলজার রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য আনোয়ারুল হক আনু এবং পাঁচবিবি উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল গফুর মণ্ডল।

জাতীয় পার্টি থেকে দলীয় মনোনয়নের তালিকায় আছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তিতাস মোস্তফা ও জেলা কমিটির সভাপতি হেলাল উদ্দীন। জামায়াতে ইসলামী থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন জয়পুরহাট জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ফজলুর রহমান সাঈদ এবং সেক্রেটারি মাওলানা গোলাম কিবরিয়া। 

আসনটি ১৯৯১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিএনপির দখলে ছিল। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ভোট বর্জন করলে এ আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট শামসুল আলম দুদু। তিনি ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও পুনরায় এমপি হন।

অ্যাডভোকেট শামসুল আলম দুদু বলেন, ‘নিজের জন্য কিছুই করিনি আমি। এখন পর্যন্ত নিজস্ব কোনো বাসা তৈরি করিনি। জয়পুরহাট সদর এবং পাঁচবিবিতে এখনো দুটি ভাড়া বাসায় থাকি। দিন-রাত জনগণের পাশে থাকি। ’

জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মণ্ডল বলেন, 'আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়পুরহাট-১ আসন থেকে আমি দলীয় মনোনয়ন  প্রত্যাশী। সে ক্ষেত্রে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। তাই নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের সুখে দুঃখে পাশে থাকছি। তাঁদের জন্য নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যাচ্ছি।'   

বিএনপির ফয়সাল আলীম জানান, বিএনপির বিভিন্ন আন্দোলন, সংগ্রাম ও কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন। রাজনৈতিকভাবে ঐতিহ্যবাহী তাঁর পরিবার। তাঁর দাদা প্রয়াত আব্দুল ওয়াহিদ ছিলেন অবিভক্ত বাংলার এমএলএ। বাবা আব্দুল আলিম ছিলেন জয়পুরহাট থেকে নির্বাচিত এমপি এবং সাবেক মন্ত্রী। তাঁদের পরিবারের প্রতি দল-মত নির্বিশেষে জেলার সর্বজনের স্বীকৃতি আছে।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মাসুদ রানা প্রধান বলেন, ' বিএনপি নির্বাচনে গেলে দল আমাকেই মনোনয়ন দেব বলে আমি বিশ্বাসী।  কারণ, আমার বাবা মোজাহার আলী প্রধান ছিলেন এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। বিএনপির রাজনৈতিক আবহেই আমার বেড়ে ওঠা। ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতি করছি। দলীয় কর্মসূচি, আন্দোলন, সংগ্রাম এবং সাংগঠনিক কাজে সব সময় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছি। নিজ অবস্থান থেকে জনগণের উপকার করে চলেছি।'

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তিতাস মোস্তফা বলেন, ' ২০১৪ সালে মহাজোটের এবং ২০১৮ সালে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলাম আমি। আগমী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল থেকে আমাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে- কেন্দ্রীয়  কমিটির উচ্চ মহল থেকে এমন সবুজ সংকেতই পেয়েছি।  আমি একজন মুক্তি যোদ্ধার সন্তান। সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান থাকাকালে জনসেবা করে প্রসংশিত হয়েছি। তাই আমার জাতীয় পার্টিসহ সর্ব মহলের একটি বিরাট ভোট ব্যাংক আছে। বিএনপি বিগত দিনে বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। এ আসনে কে বিএনপির প্রার্থী হবেন- তা সবার অজানা। আর জনগণের ভোট হরণ করে  এমপি নির্বাচিত হওয়া আওয়ামী লীগের এমপি হয়েছেন জন বিচ্ছিন্ন। জনগণ যেমন সৎ ও যোগ্য প্রার্থী চান- তেমন যোগ্যতা আমার আছে। আমি মানুষকে ভালোবাসি। মানুষও আমাকে ভালোবাসে। আমি কেবল জাতীয় পার্টির নয় বরং গোটা জয়পুরহাটবাসীর এমপি হতে চাই। সেই লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। '

জয়পুরহাট-১ আসনের ভোটের মাঠ বেশ জমজমাট। অন্য বেশির ভাগ আসনে বিএনপি তেমন তৎপর না হলেও এ আসনের দুই উপজেলাতেই দলীয় কর্মসূচিতে বেশ সরব উপস্থিতি দলটির নেতা-কর্মীদের। আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দলটি নিজেদের দারুণভাবে গুছিয়ে নিচ্ছে। ভোটারদের একটি বড় অংশ মনে করছে, দলীয় কোন্দল ভোটে প্রভাব না ফেললে এবং নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিএনপি আবার এ আসনের দখল পাবে। তবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, জনগণ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ দলকে আর ক্ষমতায় আনতে চায় না। আওয়ামী লীগের প্রতিই মানুষের সমর্থন বেশি। আর নিজস্ব ‘ভোটব্যাংক’ আছে বলে দাবি করছে জাতীয় পার্টি। 

মো. আতাউর রহমান।



 

কোন মন্তব্য নেই

Ads Place