ফুটবলপ্রেমী সমর্থকেরা যখন নিজ নিজ পছন্দের দেশের জাতীয় পতাকা কিনতে ব্যস্ত ; তখন নিজের দেশকে ভালোবেসে কেবল বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বিক্রি করছ...
আজানুর মোল্লা বলেন, 'আমি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের জাতীয় পতাকা কাছে রাখি। সেগুলো পায়ে হেঁটে ফেরি করে বিক্রি করি। কিন্তু ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয়ের মাস। তাই দেশকে ভালবেসে এ মাসের শুরু থেকে শুধুমাত্র বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বিক্রি করছি। এটা চলবে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত।'
আজানুর মোল্লা আরও বলেন, 'আমি মূলত কৃষক। সারা বছর কৃষি কাজ করি। কিন্তু প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসের প্রথম থেকে ১৬ তারিখ, ফেব্রুয়ারির প্রথম থেকে ২১ তারিখ এবং মার্চের প্রথম থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ফেরি করে বিক্রি করি। লাঠির মাথায় জাতীয় পতাকা বহন করার সময় আমার মনে হয়, যেন দেশমাতাকেই কাঁধে বহন করছি আমি।এজন্য আমি গর্বিত।'
তিনি প্রথম পতাকা বিক্রি শুরু করেন গাজীপুরে। এরপর তিনি পর্যায়ক্রমে- সাভার, নবীনগর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ এবং জয়পুরহাটে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বিক্রি করেন। তবে বিগত ১০ বছর থেকে প্রতিবছর কেবলমাত্র জয়পুরহাটের বিভিন্ন উপজেলায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বিক্রি করছেন তিনি।
এবারও তিনি জাতীয় পতাকা বিক্রি করতে জয়পুরহাটে এসেছেন। তাঁর সাথে আরও একজন এসেছে, তাঁর নাম হেমায়েত মাতব্বর। এজন্য তাঁরা জয়পুরহাট জেলা সদরের একটি আবাসিক হোটেলে উঠেছেন। তাঁরা দুজন মিলে প্রায় দেড় লাখ টাকার জাতীয় পতাকাসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি করার জন্য জয়পুরহাটে এসেছেন। তাঁর কাছে সর্বনিম্ন ১০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০০ টাকায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, হাত পতাকা, মাথার রিবন ও হাত ব্যাস পাওয়া যায়।
শুরুতে বেচাবিক্রি কম হলেও দিন দিন তাঁর বিক্রি বাড়ছে। এ পেশায় অল্প সময়ে ভালো লাভবান হওয়া যায় বলেও জানান আজানুর মোল্লা।
জয়পুরহাট সদরের খঞ্জনপুর থেকে মেয়ে তাহিয়ার জন্য পতাকা কিনতে এসেছিলেম মা মীম। তিনি বলেন, 'এ মাসে আমরা বিজয় ছিনিয়ে এনেছি। পরের অধীন থেকে মুক্ত হয়েছি। এটা অনেক আনন্দের অনুভূতি। এটা যেন নতুন প্রজন্ম উপলব্ধি করতে পারে। সেই বোধ থেকে মেয়ের জন্য ১০ টাকায় হাত পতাকা কিনেছি।'
একই এলাকার শিক্ষার্থী শামিমা বলেন, জন্মের পর আমি একটি স্বাধীন দেশে পেয়েছি। তাই সৌভাগ্যবান এবং গর্বিত। তাই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদের প্রতি সম্মান এবং শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় পতাকা কিনতে এসেছি। ১৬ ডিসেম্বরে এটা হাতে নিয়ে ঘুরব।'
মো. আতাউর রহমান।
কোন মন্তব্য নেই