জয়পুরহাটে সোনালী আঁশ পাট চাষে কৃষকের সুদিন ফিরছে। এই জেলায় এবছর পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। গতবছর পাটের দাম ভালো পাওয়ার কারণে পাট চাষে আগ্রহী ক...
জয়পুরহাটের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে, এবছর প্রচন্ড তাপাদাহ ও অনাবৃষ্টির প্রভাব পড়েছিলো পাটে। তীব্র তাপদাহ ও পানির অভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন কৃষকরা।বৃষ্টি না হওয়ায় খাল, বিল, নদী ও ডোবায় পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট জাগ নিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন কৃষকরা।গত কয়েক দিন বৃষ্টি হওয়ায় অনেক গ্রামে দেখা গেছে নারী-পুরুষ শিশু সহ পাট কেটে নদী, নালা, খাল, বিল ও ডোবায় জাগ দেওয়া, আঁশ ছাড়ানো পাটের আঁশ ছাড়ানোর কাজ করছে এবং নতুন পাট হাটে বাজারে তা বিক্রি করা সহ সব মিলিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
গত বছর পাট আবাদ হয়েছিল ৩ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে। আর চলতি মৌসুমে এবার জয়পুরহাটে পাটের আবাদ হয়েছে ৩হাজার ৫'শ হেক্টর জমিতে। গত বছরের তুলনায় এবার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে পাট বেশী আবাদ হয়েছে।
তবে পাট আবাদের শুরুতে বৃষ্টি পানিতে নিচু জমির কিছু পাট তলিয়ে নষ্ট হয়। প্রচন্ড রোদে পুড়ে লালচে হয়ে নষ্ট হয়েছিলো পাট। পাটের আঁশ শুকিয়ে গিয়েছিলো। পাট কাটার মৌসুম শুরুতে অনাবৃষ্টি আর টানা খরার কারণে পাট জাগ দেওয়ার জন্য পানি সংকটে পরেছিলো কৃষক।এখন বৃষ্টি হওয়ায় ডোবা নালায় পাট জাগ দিতে পারছে তারা। হাট বাজারে পাটের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি রয়েছে।
পাঁচবিবি উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়ের হালুঠিয়া গ্রামের মোকলেসুর রহমান বলেন,এক বিঘা জমিতে পাট চাষে প্রায় ৮থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। পাট উৎপাদন হয় প্রায় ৮-১০ মন। যার বাজারদর প্রায় ২২-২৪ হাজার টাকা। এছাড়া বিঘা প্রতি প্রায় ২ হাজার টাকার পাটকাঠি পাওয়া যায়।
সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের পাট চাষী হাসান ও আফজাল হোসেন জমির পাশের ডোবায় পাটের আশঁ ছাড়ানো সময় তারা বলেন, বৃষ্টি না হওয়ার কারনে প্রথমে পানি কম ছিলো। এখন বৃষ্টি পানি হওয়াতে জমি ও ডোবায় মধ্যে পানি এসেছে তাই পাট জাগ দেওয়া, আশঁ ছাড়ানো, রোধে শুখানো, এবং হাটে নিয়ে বিক্রি করা নিয়ে ব্যাস্ত সময় যাচ্ছে।শ্রমিকের দাম বেশি হওয়ায় গ্রামের মহিলার পাটকাঠি নেওয়ার বিনিময়ে পাটের আশঁ ছাড়ানো কাজ করছে।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক(পিপি) কৃষিবিদ মোঃ শহীদুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এবার পাটের আবাদ ভাল হয়েছে। গতবছর বাজারে পাটের দাম বেশি পাওয়ায় এবছর বেড়েছে পাট চাষ।চলতি মৌসুমে জেলায় দেশী ও তোষা পাট চাষের জন্য ৩ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৭৬ মেট্রিক টন।এবার ৩ হাজার ৪৯৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ শত ৪৫ হেক্টর জমিতে বেশি পাট চাষ করেছেন কৃষকরা। পাট কাটার পর চাষিদের কম ব্যয়ে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কৃষি বিভাগ থেকে। এ পদ্ধতিতে পাট পচালে পাটের আঁশের মানও ভালো হয়। ভালো মানের পাট উৎপাদন করতে পারলে দামও ভালো পাওয়া যাবে। এতে করে তারা লাভবান হবেন।
জনি সরকার।
কোন মন্তব্য নেই