মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক না পাওয়ায় হাদিসুর রহমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র বাহিরে এসে ...
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ রকেট হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান আরিফের (৩৩) মৃত্যুর খবর এলাকায় ছগিয়ে পড়লে শোকের ছায়া নেমে আসে।
হাদিসুরের বাড়িতে এলাকার সবাই ছুটে আসেন পরিবার সদস্যদেও শান্তনা দিতে। বাড়িতে সবাই শোকের কান্নায় জর্জরিত। স্বজনদের কান্না দেখে এলাকাবাসীও শোকে কাতর হয়ে পড়েছে।
নিহত নাবিক হাদিসুর রহমান আরিফ বরগুনার বেতাগী উপজেলার ৩ নং হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মাস্টার রাজা হাওলাদার এর বড় ছেলে ও বেতাগী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকানের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে। ৪ ভাই বোনের মধ্যে হাদিসুর রহমান আরিফ দ্বিতীয়। তিনি ৪৭ ব্যাচের ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন।
হাদিসের ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স জানায়,তার সাথে মৃত্যুর আগে ফোনে কথা হয়েছে ।মোবাইলে নেটওয়ার্ক না পাওয়ায় তার ভাই আরিফ জাহাজের বাইরে এসেছিলেন তার সাথে কথা বলতে।কিন্তু সেই কথা বলাই তার মৃত্যুর করন হল। বাকিরা জাহাজেই ছিলেন।তারা অক্ষত আছেন।
হাদিসুরের নিহতের বিষয়টি জানিয়ে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট সাজিদ হুসাইন বলেন, ‘বাংলাদেশ সময় বুধবার রাত ৯টা ২৫ মিনিটে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’তে রকেট হামলা হয়েছে। এতে ওই জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান মারা গেছেন। বাকিরা ভালো আছেন।
এ ঘটনায় নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন সাজিদ। স্ট্যাটাসে তিনি জানান- এমভি বাংলার সমৃদ্ধিতে রকেট হামলা। একজন বাদে বাকি সবাই অক্ষত। কিছুক্ষণ আগে বাংলাদেশ সময় (২ মার্চ ২০২২) রাত প্রায় ৯:২৫-এ জাহাজের ব্রিজে রকেট হামলা হয়েছে। সবার সাহসী তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে আগুন নিভাতে পেরেছে। সবাই আল্লাহর কাছে ওদের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করি। গভীর বেদনার সাথে জানাচ্ছি যে জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান মৃত্যুবরণ করেছেন।
যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে আটকে পড়ে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। জাহাজটিতে ২৯ জন বাংলাদেশি নাবিক ছিলেন। জাহাজটি বর্তমানে ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দর চ্যানেলে নোঙর করা আছে। রকেট হামলার পরে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জানার চেষ্টা চলছে।
বিএসসি সূত্রে জানা গেছে, সিরামিকের কাঁচামাল ‘ক্লে’ পরিবহনের জন্য জাহাজটি তুরস্ক থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় পৌঁছায়। সেখান থেকে কার্গো নিয়ে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। তবে যুদ্ধাবস্থা এড়াতে জাহাজটিকে সেখানে পৌঁছানোর পরই পণ্য বোঝাই না করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য নির্দেশনা দেয় শিপিং কর্পোরেশন। শেষ মুহূর্তে বন্দরের পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশের এই জাহাজটি। এরপর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
এর আগে বুধবার দুপুরে জাহাজটির বিষয়ে খবর নেওয়া হলে শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) মহাব্যবস্থাপক সংবাদ মাধ্যমকে বলেছিলেন, এখনো কোনো দুর্ঘটনা হয়নি। ওই বন্দরে শুধু আমাদের এটি না, আরও বেশ কয়েকটি জাহাজ আটকা আছে। আমাদের জাহাজে থাকা নাবিকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করা হচ্ছে। তাদের পর্যাপ্ত খাবার মজুত আছে।
কোন মন্তব্য নেই