দিনাজপুরের পুলহাট শিল্পনগরী থেকে খানপুর পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে সড়ক ও জনপদ (সওজ) ...
দিনাজপুরের পুলহাট শিল্পনগরী থেকে খানপুর পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ।
রবিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে শুরু হওয়া এ অভিযানে অংশ নেয় জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সওজ বিভাগের কর্মকর্তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে পুলহাট থেকে খানপুর পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে শতাধিক দোকান ও বসতঘর গড়ে ওঠে। এতে সড়কটি সরু হয়ে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছিল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগেও একাধিকবার সতর্ক করা হলেও দখলদাররা জায়গা খালি করেননি।
অভিযান চলাকালে সওজ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, জনস্বার্থে এই উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। তারা সরকারি জায়গা দখলমুক্ত রাখতে ও উন্নয়ন কার্যক্রমে সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
দিনাজপুর সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, পুলহাট থেকে খানপুর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এলাকায় সড়কের ৮৫ ফিট প্রশস্ত অংশের ভেতরে থাকা সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে। ১৯৪২ সালে অধিগ্রহণকৃত সরকারি জায়গা দখলমুক্ত রাখতেই এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, দখলমুক্ত জায়গায় সড়ক প্রশস্তকরণ, ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়ন ও জনসাধারণের নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করতে উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে।
অভিযানের সময় দেখা যায়, ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে একের পর এক দোকান, টিনের ঘর ও কাঠের স্থাপনা ভেঙে ফেলা হচ্ছে। আকস্মিক এই অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম আর্থিক বিপর্যয়ে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, যথাযথ নোটিশ ও সময় না পাওয়ায় দোকানের মালামাল সরিয়ে নিতে পারেননি।
ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী কাসেম বিন মর্তুজা বলেন, ১৫ বছর ধরে এখানে দোকান চালাচ্ছি। একদিনের নোটিশে সব শেষ হয়ে গেল। ঋণ নিয়ে দোকান তুলেছিলাম, এখন সব ভেঙে গেল। কীভাবে ঋণ শোধ করব জানি না।
মুদি দোকানি আকবর আলী বলেন, আমরা জানতাম না এটা সড়ক বিভাগের জায়গা। আগে থেকে সময় দিলে দোকানের জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে পারতাম। এখন সব যন্ত্রপাতি ভেঙে গেছে।
ফল বিক্রেতা আমেনা বেহম বলেন, এই দোকানেই সংসার চলত। এখন দোকান নেই, আয়ের পথও বন্ধ হয়ে গেল। কোথায় যাব বুঝতে পারছি না।
মেরামত কারিগর শহিদুল হক বলেন, রাস্তা প্রশস্ত হওয়া দরকার, এতে আমাদেরও সুবিধা হবে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের উদ্যোগও নেওয়া উচিত। বিকল্প জায়গা না দিলে অনেক পরিবার বিপদে পড়বে।
মোকছেদুল মমিন মোয়াজ্জেম।

কোন মন্তব্য নেই