দীর্ঘ দুই দশক ধরে অন্ধকারে ডুবে থাকা ঘরে অবশেষে জ্বলে উঠল আলোর প্রদীপ। টাকার অভাবে ২০ বছরেও বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে না পারা জয়পুরহাটের কালাই উপজে...
সম্প্রতি দৈনিক রূপালী বাংলাদেশসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘ভাঙা টিনের ঘরে বিদ্যুৎবিহীন জীবন লিলিমন বিবির’ ও ‘গরম-অন্ধকারের যুদ্ধে একা লিলিমন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি সাড়া তোলে স্থানীয় প্রশাসন ও সচেতন মহলে। খবরটি নজরে আসে মানবিক সংগঠন ‘মৌলিক বাংলা’-র। পরে চ্যানেল আই জয়পুরহাট প্রতিনিধি শফিউল বারী রাসেলের উদ্যোগে ও লন্ডন প্রবাসী সালেহ আকরাম মেরিনের সহযোগিতায় লিলিমন বিবিকে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে কালাই প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘মৌলিক বাংলা’-র আয়োজনে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কালাই প্রেসক্লাবের সভাপতি সেলিম সারোয়ার শিপন। তিনি লিলিমন বিবির হাতে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ৫ হাজার টাকার চেক তুলে দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাব কালাইয়ের সভাপতি আতাউর রহমান, সহ-সভাপতি তানভিরুল ইসলাম রিগান, সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট নাফিউৎ জামান তালুকদার ডলার, দপ্তর সম্পাদক আসাদুজ্জামান নয়ন, আইন সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক প্রিন্স, আপ্যায়ন সম্পাদক লিটন তালুকদার, নির্বাহী সদস্য সজিবুল ইসলাম পাভেল এবং মৌলিক বাংলার প্রতিনিধি সাকিব হোসেনসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা।
সহায়তা পেয়ে আবেগাপ্লুত লিলিমন বিবি বলেন, “২০ বছর অন্ধকার ঘরেই ছিলাম বাবা। হারিকেনের আলোয় রাত কাটিয়েছি। এখন বিদ্যুৎ নিতে পারব—খুব খুশি লাগছে। যারা আমাকে সাহায্য করেছে, আল্লাহ তাদের ভালো রাখুন।”
জানা গেছে, জয়পুরহাটের কালাই পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সড়াইল গ্রামের বাসিন্দা ৫৫ বছর বয়সী স্বামী পরিত্যক্তা লিলিমন বিবি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ভাঙা টিনের ছাপড়া ঘরে বসবাস করছেন বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায়। ঘরে ফ্যান নেই, বাল্বও নেই—কুপি ও হারিকেনের আলোই ছিল তার একমাত্র ভরসা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার অসহায় জীবনচিত্র ছড়িয়ে পড়লে মানবিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এতে সাড়া দেন প্রবাসীসহ স্থানীয় সমাজসেবী ও সাংবাদিকরা।
এখন বিদ্যুৎ সংযোগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই দুই দশকের অন্ধকার জীবনে সত্যিকারের আলো দেখতে পাবেন লিলিমন বিবি।
আতাউর রহমান।

কোন মন্তব্য নেই